
ছবিতে এই মানুষটি মনের আনন্দে ডিম ভাজি করছেন নিজের আরামপ্রিয় স্নেহের ছোট ভাইয়ের জন্য।উনাকে দেখলে মনে হবে, একজন আটপৌরে বাবা রান্নাঘরে পরিবারের সাথে সুন্দর মুহুর্ত
উনার প্রথম পরিচয়, রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের প্রথম ব্যাচের প্রথম ছাত্র অর্থাৎ ইন্টেক নং -১ রোল নং -১।
রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের কলেজ ক্যাপ্টেইন ছিলেন।
মেট্রিক পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন।
ইন্টারমেডিয়েট পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছিলেন।
স্বাধীনতা যুদ্ধের পর বাংলাদেশ থেকে এক দল ছাত্র প্রথমবারের মত মস্কোতে যায় পড়াশোনার জন্য।
এয়ারপোর্ট এর ইমিগ্রেশন অফিসার তখন বাংলাদেশকে চিনতেন না। বার বার জিজ্ঞেস করছিলেন- বাংলাদেশ কোথায়?এই ভদ্রলোক তখন চিৎকার করে উঠেছিলেন- “আমরা বঙ্গবন্ধুর দেশ থেকে এসেছি!!”সাথে সাথে ইমিগ্রেশন অফিসার সসম্মানে তাদেরকে যেতে দিলেনন।
কিন্তু নিয়তির অমোঘ সিদ্ধান্তে তিনি মস্কোতে পড়ালেখা শেষ করতে পারেন নাই। ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় দিনের অর্ধেকেরও বেশি সময়ে প্রচন্ড মাথাব্যাথায় কাঁতরাতেন।
এভাবেই কেটে যায় বেশ কয়েক বছর। এইদিকে তারই বন্ধুবান্ধবরা জীবনে স্ট্যাবলিশড।
তিনি অসহ্য মাথাব্যথায় দিন যাপন করছেন। শারীরিক অসুস্থতা ও মানসিক পীড়ায় তিনি ভেঙ্গে পড়তে পারতেন। হার মেনে যেতে পারতেন সহজে।কিন্তু না, উনি হার মানার মানুষ নয়।
এমন সময়ে ভর্তি হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ তে, সেখান থেকেই বি.এ ও এমবি.এ করলেন। পড়ালেখা শেষ করেই যোগদান দিলেন বিএমডিসিতে, অত:পর ফিন্যান্স এর লেকচারার হিসেবেই আইবিএ তে যোগ দিলেন।
সেভাবেই দিন কাটাতে পারতেন, আইবিএর শিক্ষক হিসেবে। কিন্তু আল্লাহতালা তার হাত দিয়ে মানুষের উপকার করতে চেয়েছিলেন।
সেইজন্য কয়েকবছর পর আমেরিকার প্রদেশ বোস্টনে চলে আসেন ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের স্কলারশিপ নিয়ে পিএইচডি করার জন্য। পিএইচডির সাবজেক্ট ছিলো বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন।
পিএইচডি নিয়েই তিনি বোস্টন ইউনিভার্সিটিতে যোগদান করেন এসিস্টান্ট প্রফেসার হিসাবে।
অতঃপর, আর হার না মানার গল্প।
ছবির ডিম ভাজতে থাকা আজকের এই ভদ্রলোক কিন্তু দিনের অর্ধেক সময়ে মাথাব্যাথায় আক্রান্ত থাকেন। যার জন্য তাকে সেই সময়টুকু শুধুমাত্র আল্লাহপাকের জিকির করে কাটাতে হয়।
এবং দিনের বাকি অর্ধেক সময়ে তাকে কাটাতে হয় ফাইন্যান্স/ইকোনমিকস এর প্রফেসর হিসেবে হার্ভাড ইউনিভার্সিটিতে, বোস্টন ইউনিভার্সিটিতে ও সাউদার্ন নিউ হ্যাম্পশায়ার ইউনিভার্সিটিতে।